আমরা সবাই জানি ভগবান শিব রাগের বশে তাঁর ছেলে গণেশকে ধড় থেকে আলাদা করেছিলেন। কিন্তু জানেন কি ভারতের এই স্থানে গণেশের আসল মাথাটি আজও পূজা করা হয়? হিন্দু ধর্মে গণেশ প্রথম পূজিত হন। এই কারণেই তিনি সিদ্ধিদাতা। গণেশের জন্ম নিয়ে অনেক নানান মতভেদ থাকলেও উত্তরাখণ্ডের একটি গুহা রয়েছে যেখানে ভগবান গণেশের আসল মাথাটি নিরাপদ রাখা আছে।
কথিত আছে যে, যখন ভগবান শিব ভগবান গণেশের মাথা কেটে ফেলেন, তখন দেবী পার্বতীর নির্দেশে হাতির মাথা ভগবান গণেশের সঙ্গে প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু গণেশের শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া মাথাটি শিব এই গুহায় রেখেছিলেন।
জানা যায়, উত্তরখণ্ডে অবস্থিত পাতাল ভুবনেশ্বর গুহায় ভগবান শিব তার ছেলে গণেশের আসল মাথাটি রেখেছিলেন। এই গুহাটি প্রায় ৯০ ফুট। এখানে গনেশের মাথা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের অদ্ভুত রকমের জিনিস রয়েছে।
এই গুহাটির সর্বপ্রথম খোঁজ দিয়েছিলেন ঋষি আদি শঙ্করাচার্য। এই গুহাতে চার যুগের ৪টি প্রতীক রূপে চারটে পাথর রয়েছে। এর মধ্যে একটি কলিযুগের প্রতীক চিহ্ন বলা হয়। এই পাথরের বৈশিষ্ট্য হল একটু একটু করে বড় হচ্ছে। এমনও বলা হয়েছে, এই পাথর যেদিন উপরে দেওয়ালে ধাক্কা মারবে সেদিনই কলি যুগের অবসান হবে।
এখানে ভগবান গণেশের মাথা মূর্তি রূপে পূজিত হয়। গণেশের মাথার উপর ১০৮টি পাঁপড়ির ব্রহ্মকমল আছে। এই ব্রহ্মকমল থেকে গণেশের মাথার উপর ফোঁটা ফোঁটা জল পড়তে দেখা যায়। ভগবান শিব নিজের হাতে এই মূর্তির স্থাপন করেন।
স্কন্দ পুরাণে বলা হয়েছে যে, দেবাদিদেব মহাদেব স্বয়ং পাতাল ভুবনেশ্বর গুহায় গনেশের মাথাটিকে পাহারা দিচ্ছেন এবং অন্যান্য দেবতারাও এখানে তাঁর প্রশংসা করতে আসেন। এই গুহার শেষ পর্যন্ত কেউ যেতে পারলে তার মোক্ষ লাভ হয়, তাই এই এটি হিন্দু ধর্মের কাছে অত্যন্ত পবিত্র স্থান।
আরও বলা হয় যে, ত্রেতাযুগে যখন অযোধ্যার সূর্যবংশী রাজা ঋতুপর্ণ যখন একটি বন্য হরিণকে ধাওয়া করতে করতে এই গুহায় এসেছিলেন, তখন তিনি ভগবান মহাদেব সহ ৩৩ কোটি দেবতার দর্শন পান।