Cricket
সর্বকালের সেরা নিঃস্বার্থ খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত হলো ক্রিকেট একাদশ
একজন ক্রিকেটারের ছোট ছোট বৈশিষ্ট্য গুলি তার চরিত্রকে উজ্জ্বল করে তোলে। সেই সাথে সকলের কাছে তারা অনুরাগী হয়ে ওঠেন। কখনো তারা ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা না ভেবে দলের হয়ে খেলে গেছেন।
আজকের প্রতিবেদন রয়েছে, সর্বকালের সেরা নিঃস্বার্থ খেলোয়াড়দের নিয়ে গঠিত হলো ক্রিকেট একাদশ। চলুন দেখে নেওয়া যাক –
১) গ্রেম স্মিথ: (দঃ আফ্রিকা)
নিঃস্বার্থ ক্রিকেটারদের মধ্যে যদি কাউকে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিতে হয় তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রেম স্মিথের চেয়ে ভালো কেউ নেই। জানিয়ে রাখি, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একটি টেস্ট ম্যাচে ভাঙ্গা কনুই নিয়ে ১৭ বল খেলেছিলেন শুধুমাত্র ড্র করার জন্য, যদিও ম্যাচটি হেরে যায়।
২) যুবরাজ সিং: (ভারত)
বিশ্বের অন্যতম নিঃস্বার্থ ক্রিকেটার হলেন যুবরাজ সিং। নিজের মাইলফলকের কথা চিন্তা না করে দেশের স্বার্থে যতটা প্রয়োজন ততটা দিয়ে গেছেন। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ চলাকালীন ক্যান্সার ধরা পড়লেও তিনি খেলা চালিয়ে গেছেন, এই বৈশিষ্ট্য প্রমাণ করে তিনি কত বড় নিঃস্বার্থ খেলোয়াড় ছিলেন। যুবি বলেছিলেন, তিনি মারা গেলেও কোন দুঃখ নেই, কিন্তু ম্যাচের শেষ বল পর্যন্ত খেলে দেশকে চ্যাম্পিয়ন করতে চান।
৩) কেন উইলিয়ামসন: (নিউজিল্যান্ড)
বিরাট কোহলি ও স্টিভ স্মিথ এর মধ্যে সর্বদা সেরা ব্যাটসম্যান নিয়ে বিতর্ক হয় কিন্তু এদিকে উইলিয়ামসন নিঃসন্দেহে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান। ২০১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে বিতর্কিত নিয়মের কারণে হেরে যাওয়ার পরেও শান্ত ও সরল ছিলেন। এমনকি তিনি তার গত জন্মদিনে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট অনুরাগীদের সাথে মাঠে কেক কেটে মানুষের প্রতি তার নম্রতার পরিচয় দিয়েছিলেন
৪) সুরেশ রায়না: (ভারত)
২২ গজের মধ্যে যা কিছুই হোক না কেন সবার আগে আনন্দের ভাগ বসাতেন সুরেশ রায়না। এমনকি দলের অন্য ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরিতে তিনি বেশি উল্লসিত হয়ে পড়তেন। এছাড়া আইপিএলে ঋষভ পান্থ দুর্দান্ত ৯৭ রানের পর যখন আউট হন এক মুহূর্তের জন্যও তাকে অভিনন্দন জানাতে ভোলেননি তিনি।
৫) মহেন্দ্র সিং ধোনি: (ভারত)
একবার নয়, বহুবার নিঃস্বার্থ কাজের জন্য মহেন্দ্র সিং ধোনির নাম শিরোনামে এসেছিল। তিনি এমন একজন অধিনায়ক ছিলেন যিনি দলের স্বার্থে কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তবে সমালোচনার মুখোমুখি হলেও সেই কাজে সফল হয়েছিলেন। এছাড়াও দলের স্বার্থে অন্যান্য তরুণ ব্যাটসম্যানেদের টপ অর্ডারে সুযোগ করে দেন।
৬) অ্যাডাম গিলক্রিস্ট: (অস্ট্রেলিয়া)
অ্যাডাম গিলক্রিস্ট সম্ভবত বিশ্বের সেরা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান এবং তার দলের একমাত্র নিঃস্বার্থ খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত ছিলেন। আম্পায়ারের অনুধাবন করার আগেই তিনি মোট ১২ বার প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন, তাই এই বৈশিষ্ট্য তাঁর চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলে।
৭) রিচার্ড হ্যাডলি: (নিউজিল্যান্ড)
বিশ্বের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টেস্টের এক ইনিংসে প্রায় ১০ টি উইকেট নিয়ে নিয়েছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ক্যাচটি মিস হয়ে যায়। তিনি ৯টি উইকেট নিয়েই শান্ত থাকেন, তবে কখনো কাউকে দোষারোপ করেন নি। খেলার প্রতি শ্রদ্ধার কারণে তিনি নিঃস্বার্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন।
৮) শন পোলক: (দঃ আফ্রিকা)
বিশ্বের খুব কম বোলারই রয়েছেন যারা ব্যাটসম্যানদের স্লেজিং করেননি, তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাক্তন অধিনায়ক তথা ফাস্ট বোলার শন পোলক, যিনি টেস্ট ক্রিকেটে স্লেজিং ছাড়াই ৪০০টি উইকেট দখল করেছেন যা তাকে অন্যান্য ফাস্ট বোলারদের থেকে আলাদা করে।
৯) অনিল কুম্বলে: (ভারত)
টেস্ট ক্রিকেটে ভারতীয় বোলার হিসেবে সর্বাধিক ৬১৯টি উইকেট দখল করেছেন, শুধু তাই নয় তিনি প্রতিটি ক্ষেত্রে নিঃস্বার্থতার পরিচয় দিয়েছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি টেস্ট ম্যাচে কুম্বলের চোয়াল ভেঙে রক্ত বেরিয়েছিল। কিছুক্ষণ পরে সেই অবস্থাতেই ব্রায়ান লারার উইকেট নিয়েছিলেন।
১০) লাসিথ মালিঙ্গা: (শ্রীলঙ্কা)
লাসিথ মালিঙ্গা তিনি তার ক্যারিয়ারের বহুবার শ্রীলংকার উত্থান-পতন দেখেছেন, তবুও তিনি নিঃস্বার্থতার পরিচয় দিয়েছেন। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলতে এসে বর্তমান বিশ্বের সেরা বোলার জসপ্রিত বুমরাহকে নিজের হাতে তৈরি করেন।
১১) ওয়াসিম আক্রম: (পাকিস্থান)
ওয়াসিম আক্রম কেবল পাকিস্তানের উন্নয়নে অবদান রাখেননি, তার প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের ফাস্ট বোলারদেরও সহায়তা করেছেন। ইরফান পাঠান আক্রমের কাছ থেকে অনেক কৌশল শিখেছিলেন। এরপর কেকেআরের বোলিং কোচ হলে তরুণ ফাস্ট বোলাররা সহায়তা পেয়েছিলেন, যার মধ্যে অন্যতম হলেন মহম্মদ শামি।
