চারিদিকে শুধু বরফে ঢাকা আর তার মধ্যে থেকে ঝরে পড়ছে লাল রঙের ‘রক্ত’। আর সেই রক্ত বরফাবৃত পাহাড়ের মুখ থেকে উঠে আসছে। তাই এর নাম দেয়া হয়েছে ব্লাড ফলস। যার বাংলায় অর্থ রক্ত ঝর্না।
পশ্চিম আন্টার্টিকায় অবস্থিত এই উপত্যকাটি প্রথম সামনে এসেছিল ১৯১১ সালে। এই রক্ত ঝর্না আবিষ্কার করেন এক অস্ট্রেলিয়ান ভূতত্ত্ববিদ। তারই নাম অনুসারে পরবর্তীকালে এই উপত্যকার নাম রাখা হয় টেইলর ভ্যালি। তবে এই রক্ত কোথা থেকে ঝরে পড়ছে, তা জানা ছিল না কারোরই।
বিজ্ঞানীরা প্রথমে ভেবেছিলো সেখানে লাল শৈবালের কারণে এমনটা হচ্ছে। কিন্তু সেখানে কোনো লাল শৈবাল ছিল না, বরং প্রচুর পরিমাণে লোহা জমেই এই গাঢ় লাল রং তৈরি হয়েছে।
এই হ্রদের নিচে প্রচুর পরিমাণে লোহার আধিক্য থাকায় আয়রন অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসামাত্রই জারণ প্রক্রিয়া ঘটে এবং লাল বর্ণ ধারণ করে। হিমাবাহের কোন অংশে ছিদ্র থাকলে সেই পথ দিয়েই বেরিয়ে আসে ওই লাল রঙের জল। যা দেখে মনে হয় রক্ত ঝরে পড়ছে।
এইরকম একটা প্রতিকূল পরিবেশে যেখানে অক্সিজেন নেই বললেই চলে। এমনকি সূর্যের আলো পর্যন্ত পৌঁছায় না, সর্বত্র বরফে ঢাকা এবং তাপমাত্রা হিমাঙ্কের বহু নিচে থাকে সবসময়, সেখানেও প্রাণের (আণুবীক্ষণিক জীব) হদিশ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের অনুমান ভিনগ্রহেও এই ধরনের জীবের সন্ধান মিলতে পারে।
এই খবর সামনে আসতেই সারাবছর ধরে পর্যটক ও বিজ্ঞানীরা এমন দৃশ্য দেখতে ভিড় করেন এই উপত্যকায়। তবে এই উপত্যকায় পৌঁছানো খুবই দুর্গম।