ভগবত গীতা: জানা যায়, মহাভারতে যুদ্ধের সময় শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে যা বলেছিলেন তাই নিয়ে রচিত হয়েছে হিন্দুদের এই ধর্মগ্রন্থ। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুন যখন দেখলেন তার আপনজনদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে তখন তিনি মর্মাহত হয়ে পড়লেন। তাঁকে জীবনের সঠিক পাঠ দিতে যে বাণী শ্রীকৃষ্ণ দিয়েছিলেন, তাই হল ভগবত গীতা।
৫০০০ বছর পূর্বে কলিযুগ সম্পর্কে শ্রীকৃষ্ণ যা যা বলেছিলেন আশ্চর্যজনকভাবে তা হুবহু মিলে গিয়েছে। ভগবত গীতার শেষ অংশে কলিযুগ সম্পর্কে বেশ কয়েকটি ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, চলুন জেনে নেওয়া যাক –
১) কলিযুগে সময়ের সাথে সাথে ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে থাকবে ধর্ম, সততা, পরিছন্নতা, ক্ষমাশীলতা, আয়ু, শারীরিক ক্ষমতা, সহ্যশক্তি এবং স্মৃতিশক্তি।
২) আর্থিক ক্ষমতায় হবে আইন ও সুবিচার পাওয়ার একমাত্র অবলম্বন। অর্থাৎ কলিযুগে অর্থই হবে মানুষের একমাত্র ক্ষমতা।
৩) ব্রাহ্মণ হোক বা না হোক – শুধুমাত্র গলায় সাদা সুতো পড়লেই একজন ব্রাহ্মণ হিসেবে পরিচিত হবে। এছাড়া নারী-পুরুষের মধ্যে কেবল সম্পর্ক টিকে থাকবে অর্থ ও শারী’রিক সম্পর্কের উপর।
৪) কলিযুগে উচ্চপদস্থ হিসেবে তাকেই দেখা হবে যে ছলচাতুরি করে বহু টাকা রোজগার করবে। এছাড়া ধর্মের বদলে বাহ্যিক আড়ম্বর বৃদ্ধি পাবে। উপার্জনের নিরিখেই মানুষের শিক্ষা-দীক্ষা হিসেবে গণ্য হবে।
৫) নারী-পুরুষের সাত পাকে বাঁধা পড়াকে ভালোবাসায় নয় কেবলমাত্র একটি মৌখিক চুক্তি হিসেবে দেখা হবে। সমাজে তারই মূল্য থাকবে যার কাছে প্রচুর অর্থ থাকবে। এছাড়া সততা বলে কোন বস্তু আর থাকবে না।
৬) এই পৃথিবীতে ভরে উঠবে দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষদের ভিড়ে। যারা ক্ষমতার জোর দেখাবে তারাই কেবল রাজনৈতিক প্রতিপত্তি ভোগ করবে।
৭) কলিযুগে মানব সম্প্রদায় মুখোমুখি হবে কঠিন মহামারীর মুখে, তার সাথে চলবে খরা এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এর ফলে গরিব মানুষের অন্য জোটানো মুশকিল হয়ে পড়বে। এমনকি প্রকৃতিও মানুষের বিরুদ্ধে গিয়ে কখনো তীব্র গরম বা কখনো অতিবৃষ্টিতে বিপন্ন করবে।
৮) এই যুগে সন্তান তার নিজের বৃদ্ধ পিতা-মাতার দায়িত্ব অস্বীকার করতে পিছুপা হবে না।
৯) কলিযুগে সামান্য অর্থের লোভে বা ছোটখাটো কারণে মানুষের প্রাণ নিতে কেউ দ্বিধাবোধ করবে না বা স্বার্থে আঘাত লাগলে সমস্ত পুরনো সম্পর্ক ভুলে মানুষ নিজের আত্মীয়-স্বজনেরও ক্ষতি করবে।