আমেরিকা, ইউরোপ সহ কানাডার মত দেশে সরিষার তেল নিষিদ্ধ; কিন্তু কেন?

সরিষার তেল আমাদের দেশের রান্নার একটি প্রধান উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটি খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি করে। সেই কারণেই অধিকাংশ মানুষের খাদ্যের তালিকায় প্রথমে থাকে এই তেল। কিন্তু এদিকে আমেরিকা, ইউরোপ এবং কানাডার মতো দেশগুলিতে খাদ্য ও ঔষধ তৈরিতে সরিষার তেল ব্যবহারে সম্পূর্ণ বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। কিন্তু কেন? 

আসলে সরিষার তেল তৈরি হয় সরিষার গাছের বীজ থেকে। এই তেল ঝাঁঝালো ও মসলাদার হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ার বহু দেশগুলিতে উদ্ভিজ্জ খাদ্য উপাদান হিসেবে এরই রান্না করা হয়ে থাকে। তবে বেশ কিছু দেশের প্রশাসন এই তেল খাবার হিসেবে ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে সরিষার তেল খাওয়ার জন্য অনিরাপদ। ইউনাইটেড স্টেটস ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ওয়েবসাইট দাবি করে যে এতে রয়েছে ইউরিকিক অ্যাসিড, যা নির্ধারিত সীমার বেশি খাওয়া হলে হৃদরোগের কারণ হতে পারে। সরিষার তেল ভোজ্য ব্যবহারের জন্য নিষিদ্ধ, মূলত এর ইউরিক অ্যাসিড উপাদানের কারণে।

Image

এছাড়াও সরিষার তেলে রয়েছে এরুকিক অ্যাসিড নামের একটি যৌগ পদার্থ, যা মানব শরীরে ফ্যাটি অ্যাসিড তৈরি করে, যা হৃদপিন্ডে মারাত্মক ক্ষতি হয়। তবে কারো শরীরে অল্পমাত্রায় এরুকিক অ্যাসিড প্রবেশ করলে সেটা নিরাপদ কিন্তু অধিক মাত্রা হলেই বড়সড়ো বিপদের আশঙ্কা থাকে। এরুকিক অ্যাসিড স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হিসাবে পরিচিত যথা হৃৎপিণ্ডে ট্রাইগ্লিসারাইড জমা হওয়া, ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি এবং রক্তাল্পতা।

বৈজ্ঞানিকরা বিভিন্ন প্রাণীর শরীরের উপর গবেষণা করে দেখেছেন যে, দীর্ঘকাল ধরে এরুকিক অ্যাসিড প্রবেশ করলে সেটা হৃদযন্ত্রের বড় ক্ষতি করে এবং এক ধরনের রোগের সৃষ্টি করে যার নাম মায়োকার্ডিয়াল লিপিডোসিস। যেহেতু খাবার হিসেবে সরিষার তেল ব্যবহার করা ক্ষতিকারক তাই আমেরিকা, ইউরোপ এবং কানাডার মানুষেরা সরিষার তেলের পরিবর্তে খাবারের জন্য অন্যান্য তেল ব্যবহার করে থাকেন।