‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বে ভারতীয় দল উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে ছিল একথা অনস্বীকার্য। নেতৃত্বে দিতে গিয়ে তিনি আইসিসির সমস্ত ট্রফিগুলি জিতেছেন। ২৮ বছর পর ভারতীয় দলকে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন করে তার ক্যারিয়ারের সেরা প্রাপ্তিলাভ করেন।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে মহেন্দ্র সিং ধোনি অন্যান্য অধিনায়কদের তুলনায় বহু এগিয়ে। তবে এটাও সত্যি যে তিনি তার কেরিয়ারে এমন কয়েকটি চরম ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, হয়তো আজও তিনি আফসোস করেন। এবার সেই ভুল সিদ্ধান্তগুলির ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক:-
১) ২০১৫ বিশ্বকাপে যুবরাজকে সুযোগ না দেওয়া:
২০১১ বিশ্বকাপে ‘ম্যান অফ দ্যা টুর্নামেন্ট’ হওয়া যুবরাজ সিং এর দুর্ভাগ্যক্রমে পরের বিশ্বকাপে ভারতীয় দলে জায়গা হয়নি । টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে ২০১৫ বিশ্বকাপে যুবরাজকে বাদ দেওয়া হয়। এবার বিষয়টি হলো, নির্বাচকেরা কোন খেলোয়াড়কে বাদ দিলে অধিনায়ক তার জন্য দাবি করতে পারেন।
সুতরাং, মহেন্দ্র সিং ধোনি যুবরাজের প্রতি কোনো উদারতা দেখান নি। ২০১৫ বিশ্বকাপে যুবরাজের না থাকাটা খুবই খারাপ সিদ্ধান্ত ছিল এবং ভারতীয় দল সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নেয়।
২) রোটেশন পদ্ধতি:
২০১২ সালে ভারতীয় দল যখন ত্রিদেশীয় সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়া সফর করে এই সময়ে অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি একটি রোটেশন পদ্ধতি চালু করেছিলেন। জানা যায়, আগামী ২০১৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা ভেবে দলের ৩ জন সিনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যে মাত্র দুজনকে একাদশে রাখেন।
সেই সময়ে শচীন টেন্ডুলকার, গৌতম গম্ভীর এবং বীরেন্দ্র শেহবাগ দলের তিন ওপেনারকে রোটেশন পদ্ধতিতে খেলিয়েছিলেন ধোনি। কিন্তু এই নীতি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছিল। ভারতীয় দল ওই সিরিজের ফাইনালে পর্যন্ত উঠতে পারেনি। পরবর্তীকালে গৌতম গম্ভীর এই নীতিকে তীব্র ভৎসনা জানিয়েছিলেন।
৩) চেন্নাই সুপার কিংস ‘পোষন’:
ভারতীয় দলের অধিনায়ক থাকাকালীন মহেন্দ্র সিং ধোনি সিএসকে দলের খেলোয়াড়রা বিশেষভাবে সুযোগ পান। যেখানে অন্যান্য খেলোয়াড়রা দীর্ঘদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করার পরেও জাতীয় দলে সুযোগ পাননি।
এদিকে সিএসকে এর হয়ে দুই-একটি সিজনে ভালো পারফর্ম করা খেলোয়াড়রা জাতীয় দলে অনায়াসে জায়গা করে নিয়েছিলেন। ধোনির সমালোচকরা এটিকে চেন্নাই সুপার কিংস ‘পোষন’ বলে অভিহিত করেছেন।
৪) T20 বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে শেষ ওভারে কোহলিকে বলে দেওয়া:
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এর মুখোমুখি হয়েছিল ভারতীয় দল। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ছিল ৮ রান। কিন্তু অধিনায়ক ধোনি হঠাৎ বলটি বিরাট কোহলির হাতে তুলে দেন – যা সবাইকে অবাক করে দিয়েছিল।
তখনও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো একজন দুর্দান্ত স্পিনারের ২ ওভার বল বাকি ছিল। এদিকে বিরাট কোহলি ডিফেন্ড করতে ব্যার্থ হন এবং ধোনির এই সিদ্ধান্তে ভারতীয় দলকে পরাজয়ের মুখোমুখি হতে হয়।