প্রায় দুশো বছর পর ইংরেজদের শাসন ও শোষণ থেকে মুক্তি পেয়েছিল সমগ্র ভারতবাসী। এই দেশকে স্বাধীন করার পিছনে যে সকল বীরদের অবদান ছিল তাদের আজও শ্রদ্ধার সাথে আমরা স্মরণ করি। এই বিশেষ দিনটি ছিল ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট। স্বাধীন ভারতবর্ষে প্রথমবার তেরেঙ্গা উড়েছিল দেশের প্রতিটি কোনায় কোনায়।
তবে দেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও এমন একটি রাজ্য ছিল যা ১৪ বছরেরও বেশি সময় বিদেশীদের অধীনে ছিল। ব্রিটিশদের আগেও সাড়ে চারশো বছর আগে কিছু পর্তুগিজ নাগরিক এদেশে এসেছিল মৎস্য জীবিকার উদ্দেশ্যে এবং সেখানেই তারা তাদের উপনিবেশ গড়ে তোলে। ১৪৯৮ সালে পর্তুগিজ নাবিক ভাস্কো-দাগামার নেতৃত্বে পর্তুগিজ জাহাজ কালিকট বন্দর এলাকায় অবতরণ করে।
এরপর ১৫০৫ সালে পর্তুগিজ ভারতের সরকার গঠিত হয়। পর্তুগিজদের শাসনের কেন্দ্রবিন্দু ছিল কোচি এবং সেখান থেকেই পর্তুগিজ অভিযান পরিচালিত হতো। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশরা ভারতবর্ষে ছেড়ে গেলেও পর্তুগিজরা রয়ে যায়। গোয়া ছাড়াও বেশ কিছু এলাকায় পর্তুগিজরা ভারতের ভূখণ্ড দখল করে রেখেছিল।
অবশেষে ১৯৬১ সালে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন বিজয়’ নামে একটি অভিযান চালায় এবং গোয়াবাসীকে পর্তুগিজ শাসন থেকে মুক্ত করে। এই অভিযান ৪০ ঘন্টারও কম সময় লাগে। শেষ পর্তুগিজ গভর্নর জেনারেল আন্তোনিও ভাসালো ই সিলভা ১৯৬১ সালের ১৯ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ পত্রে স্বাক্ষর করেন। এরপর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী গোয়াকে ভারতে ফিরিয়ে দেন।
‘অপারেশন বিজয়’ পরিচালনায় ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর সাফল্যের উদযাপন হিসেবে প্রতিবছর ১৯ ডিসেম্বর গোয়ায় স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়, যা ১৯৬১ সালে পর্তুগিজ শাসন থেকে এই রাজ্যকে মুক্ত করেছিল।