এটি ভারতবর্ষের একমাত্র অপরাজেয় দুর্গ, ইংরেজরা ১৩ বার আক্রমণ করেও জিততে পারেনি

ভারতবর্ষে এমন অনেক ঐতিহাসিক দুর্গ রয়েছে যেগুলি বিশেষ কিছু কারণে বিখ্যাত হয়ে রয়েছে। এমনি একটি দুর্গ রাজস্থানের ভরতপুরে রয়েছে যা লোহাগড় দুর্গ নামে পরিচিত। এই দুর্গটি ভারতের একমাত্র অপরাজেয় দুর্গ। কারণ কেউ কখনো জিততে পারেনি। এমনকি ব্রিটিশাও এই দুর্গ থেকে পরাজয় মেনে নিয়েছিল।

Image

লোহাগড় দুর্গটি ১৭৩৩ সালে জাট শাসক মহারাজা সুরোজ মল দ্বারা নির্মিত হয়েছিল। সে সময় কামান ও বারুদের প্রচলন বেশি থাকায় দুর্গটি নির্মাণে বিশেষ ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছিল, যাতে গোলাবারুদও দুর্গের দেওয়ালের কোনও ক্ষতি করতে না পারে।

এই দুর্গ নির্মাণের সময় একটি প্রশস্ত এবং মজবুত পাথরের শত শত ফুট প্রাচীর নির্মাণ করা হয়। কামানের গোলাগুলির প্রভাব এড়াতে একটি গভীর জলভর্তি খাদ তৈরি করা হয়। যেখানে প্রচুর কুমির ছিল। শত্রুরা কোনভাবে জল পেরিয়ে গেলেও সমতল প্রাচীর বেয়ে ওঠা শুধু কঠিনই ছিল না, অসম্ভব ছিল।

Image

লোহাগড় দুর্গ আক্রমণ করা কারো পক্ষে সহজ ছিল না। আসলে কামান থেকে ছোড়া গোলা প্রাচীরে নিক্ষেপ হতো এবং জলে পড়ে গিয়ে আগুন নিভে যেত। এই কারণে দুর্গের কোন ক্ষতি হয়নি আর কোন শত্রুও ভেতরে প্রবেশ করতে পারেনি। 

এই দুর্গ দখল করতে ব্রিটিশরা ১৩ বার আক্রমণ চালিয়েছিল। শত শত কামানের গোলা নিক্ষেপ করার পরেও দুর্গের উপর কোন প্রভাব পড়েনি। ১৩ বারের মধ্যে একবারও ইংরেজ সেনা প্রবেশ করতে পারেনি। এরপর বারবার পরাজয়ের ফলে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী হতাশ হয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে চলে যায়। 

Image

ইংরেজ ঐতিহাসিক জেমস ট্যাডের মতে, এই দুর্গের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল এর দেয়াল, যা বিশেষ মাটি দিয়ে তৈরি হয়। এই দুর্গ জয় করা আর লোহার টুকরো চিবানোর চেয়ে কম ছিল না। এই দুর্গ সর্বদাই শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং অপরাজেয় থেকেছে।