দাদার চেয়েও ধনী ছিলেন অনিল আম্বানি, কিন্তু কীভাবে পিছিয়ে পড়লেন মুকেশের থেকে

কীভাবে অনিল আম্বানিকে টেক্কা দিয়ে মুকেশ আম্বানি এগিয়ে গেলেন

বর্তমানে অনিল আম্বানি (Anil Ambani) আর্থিকভাবে খুবই দুর্দশাগ্রস্থ। এক সময় দাদার থেকেও ধনী থাকা অনিল আম্বানি কিভাবে পিছিয়ে পড়লেন ব্যবসার দিক দিয়ে, এই প্রশ্নের মুখোমুখি তাকে অনেকবারই পড়তে হয়েছে। আসলে মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani) ও অনিল আম্বানি উত্তরাধিকার সূত্রে ব্যবসা করছেন এবং দুই ভাই আলাদা আলাদা ভাবে তার পিতার ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন।

কিন্তু গত ১৫ বছরে মুকেশ আম্বানি তার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিকে (Reliance Industries) বড় সাফল্যের উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। অন্যদিকে অনিল আম্বানি ধীরে ধীরে নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়েছেন। সময়ের সাথে সাথে তার ব্যবসা লোকসান হতে থাকে এবং আজ তার কোম্পানিগুলো ঋণগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু মুকেশ আম্বানির প্রতিটি ব্যবসাই লাভজনক।

আসলে ধীরুভাই আম্বানির (Dhirubhai Ambani) মৃত্যুর পর দুই ভাইয়ের মধ্যে সমানভাবে ব্যবসা ভাগ হয়ে যায়। আশা করা হয়েছিল যে পিতার মৃত্যুর পর দুই ভাই মিলে রিলায়েন্স ব্যবসার প্রসারিত করবে, কিন্তু তেমনটা হয়নি। ধীরু ভাইয়ের মৃত্যুর দু বছরের মধ্যে দুই ভাইয়ের তিক্ততা প্রকাশ্যে আসে। এই সমস্যার সমাধান করেন তার মা কোকিলাবেন (Kokilaben)।

কোকিলাবেন তার দুই ছেলেকে সমস্ত সম্পত্তি ভাগ করে দেন। তেল শোধনাগর ও পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসা মুকেশ আম্বানির হাতে তুলে দেন, আর অন্যদিকে অনিল টেলিকম, ফিন্যান্স ও এনার্জি ইউনিট হাতে পান। এরপর দুই ভাই একে অপরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। বলা হয় যে মুকেশ টেলিকম ব্যবসায় পা রাখবেন না, অন্যদিকে অনিল তেল শোধনাগার ও পেট্রোকেমিক্যাল থেকে দূরে থাকবেন।

প্রথম দিকে অনিল আম্বানির ব্যবসা দ্রুত গতিতে এগতে থাকলেও ধীরে ধীরে পতনের দিকে এগিয়ে যাই। এরপর অনিল আম্বানি পুঁজি বিনিয়োগ প্রকল্পে নামতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। কোন কৌশল ছাড়াই সেই প্রতিযোগিতায় তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু ২০০৮ সালে বিশ্ব মন্দা তাকে একটি বড় ধাক্কা দিয়েছিল। জানা যায়, অনিল আম্বানির ৩১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপরই শুরু হয় তার অবনতি।

অন্যদিকে মুকেশ আম্বানির ভাগে যে ব্যবসা এসেছিল তার সাফল্যের পথ ধরে এগোতে থাকে। এরপর দুই ভাইয়ের অপ্রতিদ্বন্দ্বিতা স্বাক্ষর ২০১০ সালে চুক্তি শেষ হয় এবং এই সুযোগেই ছিলেন মুকেশ আম্বানি। এরপরই টেলিকম সেক্টরে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ২.৫ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন। এরপরই বাজারে আসেরিলায়েন্স জিও (Reliance Jio)।

মুকেশ আম্বানির এই পদক্ষেপ তাকে এক ধাক্কায় ভারত কথা এশিয়ার ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় জায়গা করে নেন। এই সময় মুকেশ আম্বানির শক্তি পেট্রোক্যামিকেল ও টেলিকম সংস্থা জিও নতুন উচ্চতা অর্জন করেছে। অন্যদিকে তার ভাই অনিল আম্বানির ব্যবসা ডুবতে বসেছে এবং তার কোম্পানিগুলোর ব্যাঙ্কের কাছে বিশাল অঙ্কের ঋণ রয়েছে।