স্বাধীনতার ৭৫ বছর কেটে গেছে তবুও এমন এক জায়গা আছে যে অঞ্চলটি আজও ব্রিটিশদের দখলে রয়েছে। প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার কর দিতে হয় ওই ব্রিটিশ সংস্থাকে। স্বাভাবিকভাবেই এমন তথ্য শোনার পরে সাধারণ মানুষের মনে একটাই প্রশ্ন উঠবে, কেন সেই জায়গা আজও ব্রিটিশদের অধীনে রয়েছে? তবে এর পিছনে রয়েছে এক ঐতিহাসিক কারণ।
জানা গেছে, মহারাষ্ট্রের অমরাবতী এবং মর্তুজাপুরের মধ্যে এই ন্যারোগেজ রেললাইনটি স্থাপন করা হয়েছিল বৃটিশদের আমলে। যার মোট দৈর্ঘ্য হলো ১৮৯ কিমি। এই ট্রাকটিতে কেবলমাত্র একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে যার নাম শকুন্তলা এক্সপ্রেস। অতি ধীর গতিতে চলা এই ট্রেনটি সম্পূর্ণ যাত্রা করতে ৬-৭ ঘন্টা সময় নেয়, যার মধ্যে ছোট-বড় ১৭ টি স্টেশনে থামে।
আসলে এক সময় অমরাবতী কার্পাস তুলার জন্য বিখ্যাত ছিল। যার বাজার সারাদেশে ছেয়ে যায়। আর ব্রিটিশরা ব্যবসার স্বার্থে কার্পাস তুলা মুম্বাই বন্দরে আনার জন্য এই রেলপথটি তৈরি করে। ১৯০৩ সালে ব্রিটিশ সংস্থা ক্লিক নিক্সনের এই রেলপথটি স্থাপন করতে ১৩ বছর লাগে। এই রুটে শকুন্তলা এক্সপ্রেস চলার কারণে এটি শকুন্তলা রুট নামে পরিচিত হয়।
প্রায় ১০০ বছরের পুরনো এই ট্রেনটি বাষ্প ইঞ্জিন এর সাথে চলত। ১৯৯৪ সালে এটি ডিজেল ইঞ্জিনের দ্বারা চালনা করা শুরু হয়। এই রেল রুটটি এখনো ব্রিটিশ সংস্থার দ্বারা পরিচালিত হয় এবং এই ৫ বগি ট্রেনটিতে প্রতিদিন এক হাজারেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন।
তবে ভারতবর্ষ স্বাধীন হওয়ার পরেও এই রেলপথটি এখনো কেন ব্রিটিশদের অধীনে রয়েছে বলে অনেকেই অবগত রয়েছেন। ১৯৫১ সালে যখন রেলপথের জাতীয়করণ করা হয়েছিল তখন এই রেলপথ রুটটি ভারত সরকারের অধীনে আসেনি। তাই আজও এই রেলপথের পরিবর্তে প্রতিবছর ব্রিটিশ সংস্থাকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকার কর দিতে হয়।
তবে ব্রিটিশ সংস্থা এখনো ওই রেলপথটির রক্ষণাবেক্ষণ করে। যদিও প্রতিবছর ভারত সরকারের তরফ থেকে কোটি টাকার কর নেয় কিন্তু তারা কোন সুব্যবস্থা গড়ে তোলে নি। খুবই খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে ওই ট্রাকটি। জানা গেছে, গত ৬০ বছর রেল ইঞ্জিনের কোন মেরামত করা হয়নি। তাই এখন এর সর্বাধিক গতি ঘণ্টায় মাত্র ২০ কিলোমিটার।