৫ কিংবদন্তি ক্রিকেটার যাদের বিদায় ম্যাচটি ছিল খুবই আবেগঘন

কিছু ক্রিকেটার রয়েছেন যারা দীর্ঘদিন দেশের গৌরব অর্জন করার সাথে সাথে মানুষের কাছে অত্যন্ত প্রিয় হয়ে ওঠেন। এরপর একটা সময়ের পর তিনি যখন ক্রিকেটকে বিদায় জানায় সেই মুহূর্তটি সকলের কাছে খুবই আবেগময় হয়ে ওঠে। এই প্রতিবেদনে তেমনি ৫ জন ক্রিকেটারের সম্পর্কে বলা হয়েছে যাদের বিদায়ী ম্যাচটি খুবই আবেগঘন ছিল।

৫) সৌরভ গাঙ্গুলী:

অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী ফিক্সিংয়ের ফাঁদে আটকে পড়া ভারতীয় দলকে নির্ভয়ে খেলতে শিখিয়েছিলেন এবং বিদেশের মাটিতে জয়ের পথ দেখিয়েছিলেন। সৌরভ গাঙ্গুলী তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি ২০০৮ সালে খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। সেই সময়ই ধোনি শেষ কয়েক ওভারের জন্য তাকে অধিনায়কত্ব করতে বলেছিলেন। সৌরভ গাঙ্গুলী তার শেষ ম্যাচে ৮৫ রান করেন এবং ভারত সেই ম্যাচটি অস্ট্রেলিয়াকে ১৭২ রানে পরাজিত করে। ম্যাচের পর পুরো দল তাদের প্রিয় অধিনায়ককে কাঁধে তুলে নিয়ে সম্মানের সাথে বিদায় জানায়। 

৪) লাসিথ মালিঙ্গা:

শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটের বিখ্যাত খেলোয়াড়দের মধ্যে লাসিথ মালিঙ্গা অন্যতম, যিনি গত কয়েক বছর ধরে নিজের কাঁধে দলের আশার ভার বহন করে আসছিলেন। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনি তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন এবং ৩টি উইকেট নিয়েছিলেন। ম্যাচের পর মালিঙ্গাকে দুর্দান্ত বিদায় দেওয়া হয়েছিল। মালিঙ্গা তরুণ খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন যে এটাই তার অবসর নেওয়ার সঠিক সময়।

৩) মুথাইয়া মুরালিধরন

টেস্ট ক্রিকেটে ৮০০ উইকেট নেওয়া ইতিহাস সৃষ্টিকারী মুথাইয়া মুরালিধরনের বিদায়ী ম্যাচটিও ছিল খুবই হৃদয়বিদারক। ২০১১ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা দল ফাইনালে উঠে এবং এটি ছিল মুরালিধরনের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। শ্রীলঙ্কা দল তার হাতে বিশ্বকাপ ট্রফি উপহার দিতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা হয়নি। ধোনির শেষ ছক্কা মারার সাথে সাথে মুরালিধরনের ১৯ বছরের দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ার দুঃখজনকভাবে সমাপ্তি ঘটে। একদিকে শচীন টেন্ডুলকারকে সকলেই কাঁধে তুলে জয়োল্লাসে মেতেছে, অন্যদিকে স্পিন কিংবদন্তি মুরালিধরন নিরবে ক্রিকেটকে বিদায় জানান। এই মুহূর্তটা ছিল সত্যিই আবেগপূর্ণ।

২) ব্রায়ান লারা:

ব্রায়ান লারা যখনই নিজের ছন্দে থেকেছেন তখনই তার ব্যাট থেকে বড় বড় ইনিংস এসেছে। টেস্ট ক্যারিয়ারে ১২ হাজার এবং ওয়ানডেতে ১০ হাজারেরও বেশি রান করেছেন। ২০০৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ওয়েস্ট ইন্ডিজে অনুষ্ঠিত হয় এবং তারপরে লারাকে দল থেকে বাদ দেওয়া হবে বলে জানা যায় কিন্তু তার আগেই তিনি অবসর ঘোষণা করে দেন। ২০০৭ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন, যেখানে তার ব্যাট থেকে এসেছিল মাত্র ১৮ রান। তিনি যখন প্যাভিলিয়নের দিকে যেতে শুরু করেন ইংল্যান্ডের খেলোয়াড়রা দু’পাশে দাঁড়িয়ে তাকে চমৎকার বিদায় জানান। এর সাথেই ক্রিকেটের এক যুগের অবসান হয়েছিল।

১) শচীন টেন্ডুলকার:

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০টি সেঞ্চুরিসহ সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী শচীন টেন্ডুলকারকে ক্রিকেটের ঈশ্বর বলা হয়। দীর্ঘ ২৪ বছরের ক্যারিয়ারে ভারতীয় দলের হয়ে অনেক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেছেন ও দলকে জিতিয়েছেন। ২০১৩ সালে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে তার শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন। ম্যাচের পর তিনি যখন বিদায়ী ভাষণ দিতে শুরু করেন তখন তার চোখ জলে ভিজে গিয়েছিল এবং স্টেডিয়ামে উপস্থিত থাকা দর্শকদেরও আবেগঘন হতে দেখা যায়। তখন সবাই একটাই কথা চিন্তা করছিল যে তারা কখনো আর শচীন টেন্ডুলকারকে ২২ গজে দেখতে পাবে না।